Skip to main content

বউচি খেলা - বাংলার ঐতিহ্য

বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনে বউচি নামক খেলাটি একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। এ খেলা বাঙালির সংস্কৃতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রেখেছে। তবে,  আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে খেলাগুলো শহর অঞ্চলে প্রায় বিলুপ্ত । শহরে খেলাটির কদর তেমন না হলেও গ্রামে এই খেলার চলন এখনো দেখা যায়৷ মালিয়া খাতুনের ‘বিচিত্র প্রবন্ধে’ বলা হয়েছে “সুস্থ - সুগঠিত দেহাবয়ব গড়ে তোলার উদ্দেশ্য থেকেই খেলার উদ্ভব ঘটেছে।”

কার্যপদ্ধতি

খেলাটিতে কতজন খেলবে তার কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তবে সাধারণত দশজন করে অথবা জোড়া সংখ্যক সদস্য এই খেলায় অংশগ্রহণ পারে। 

খেলার শুরুতে একটি বড় ঘড় এবং  একটি ছোট ঘর করে দুইটি ঘর তৈরি করে নেওয়া হয়৷ ছোট আকৃতির ঘরকে বুড়িঘর বলা হয়। বুড়িঘরে একজন চালাক বা বিচক্ষণকে রাখা হয় ( বউ বা বুড়িকে )।  দুইটি ঘরের মাঝে প্রায় ২০-২৫ ফুটের ব্যবধান রাখা হয়। এটা আবশ্যিক নয় যে, ২০-২৫ ইঞ্চি ব্যবধানই রাখতে হবে। ইচ্ছা করলে জায়গা অনুযায়ী  দৈর্ঘ্য কম করা যায়। 

চিত্র:খেলার মানচিত্র

মূল: বিপক্ষ দলের মূল উদ্দ্যেশ্যে হচ্ছে বউকে আটকে রাখা এবং ঠিক তেমনই বউয়ের উদ্দ্যেশ্যে যে করেই হোক বড় ঘড় থেকে বাহির হয়ে ছোট ঘরে প্রবেশ করা। 


এ খেলাতে দুইটি দল থাকে, একটি দল বউকে আটকে রাখে এবং আরেকটি দল দম ধরে প্রতিপক্ষকে তাঁড়া দিয়ে বউকে ছোট ঘর থেকে বড় ঘরে আনার চেষ্টা করে। ঘর থেকে বের হওয়া মাত্র যদি বউ বা দম ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তিকে কেউ ছুইয়ে ফেলে তাহলে তারা খেলায় হেরে যাবে। যদি আসতে সক্ষম হয় তাহলে জিতে যাবে। উল্লেখ্য, বড় ঘর থেকে দম দম ধরে আসা মাত্র ( যতক্ষণ দম থাকে) কেউ ছুইলে ব্যক্তিটি খেলা থেকে বাদ যাবে। তবে অন্যরা খেলতে থাকবে।

বউচি খেলা বাংলাদেশের ঐতিহ্যের একটি বিরাট নমুনা। এই খেলা আমার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে পারে। খেলাটি আমাদের স্বাস্থ্য এবং মনের জন্য খুবই উপকারী। মূলত, সু-স্বাস্থ্য এবং মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে একজন শিশুর জন্য খেলাটি খুবই উপযোগী। 

Comments